কাউনিয়া (রংপুরর)প্রতিনিধিঃ রংপুরের কাউনিয়ায় এনজির’ও ঋণখেলাপী মামলায় এক নারী আসামীর পরিবর্তে নিরপরাধ এক নারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মামলার অভিযুক্ত আসামীর নাম ঠিকানা যাচাই না করে নিরপরাধ এক নারীকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠায় কাউনিয়া থানার এসআই রবিউল ইসলাম। ভুক্তভোগীর নারী উপজেলা কুর্শা ইউনিয়ন পুর্বচান্দঘাট গ্রামের মো: আজিজুল ইসলামের মেয়ে শারমীন আক্তার (৪০) ডাক নাম মমতাজ (যার জাতীয় পরিচয়পত্র নাম্বার ১৯১৪৮৬৯৭৬১)।
স্বামী সেকেন্দার আলী। শারমীন আক্তার জানায়, গত ২২ জুন (শনিবার) পরিবারের লোকজন নিয়ে বেইলী ব্রিজ বাজার আসেন তার স্বামীকে বাসে তুলে দিতে ঢাকার উদ্দেশ্য। বিকেলে হঠাৎ করে কাউনিয়া থানা পুলিশের একটিদল শারমীন আক্তার মমতাজ আটক করে থানায় নিয়ে আসে। তিনি বিষয়টি জানতে চাইলে পুলিশ তাকে জানায় তার বিরুদ্ধে ঋণখেলাপী মামলার পরোয়না আছে। শারমীন আক্তার বলেন, তিনি আজ পর্যন্ত কোথায় কোন ঋণ করেন নাই। তার নামে ঋণখেলাপী মামলা নেই। বলার পরও তাঁর কোন কথা কর্নপাত করেনি পুলিশ। এমনকি স্বজনদের সাথে কথাও বলতে দেওয়া হয়নি তাকে। অথচ পুলিশ হয়রানি করে তাকে বিনাপরাধে লোকসমাগত থেকে গ্রেফতার করে পরের দিন আদালতে সোর্পদ করে। পরে তিনি মামলার আসল নারীর নামে সহি করে আদালতে থেকে জামিনে বেরিয়ে আসেন। তিনি জানান তার বাড়ী পুর্বচান্দঘাট গ্রামে। আর মামলার মুল আসামীর বাড়ী শিবু বাগবাড়ি এলাকায়। মুল আসামীর পিতা মাতার নামের সাথেও তাদের নাম ঠিকানা মিল নাই। এদিকে মামলা সুত্রে জানা গেছে, টিএমএসএস এনজিও অন্নদানগর শাখা থেকে কাউনিয়া উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের শিবু বাগবাড়ি গ্রামের রফিকুল ইসলামের স্ত্রী মোছাঃ মমতাজ বেগম (যার জাতীয় পরিচয় পত্র নাম্বার ৮৫১৭৩২৮৩৫১১০৫) ২০২১ সালে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা ঋণ নেয়। তিনি ঋণের টাকা পরিশোধ না করায় ২০২২ সালের এপ্রিলে মমতাজ বেগমের বিরুদ্ধে রংপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পীরগাছা আমলী আদালতে মামলা দায়ের করে টিএমএসএস কর্তৃপক্ষ। মমতাজ বেগম হাজির না হওয়ায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী করে আদালত। কিন্তু কাউনিয়া থানা পুলিশের এসআই মামলার প্রকৃত আসামী মমতাজকে গ্রেফতার না করে শারমীন আক্তারকে আটক করে। পরে এনজিরও ঋণখেলাপী মামলায় শারমীন আক্তারকে মমতাজ বেগম সাজিয়ে তাকে আদালতে সোর্পদ করে কাউনিয়া থানার এসআই রবিউল ইসলাম।শারমীন আক্তার ও এলাকাবাসীর কয়েকজন সাংবাদিকদের বলেন, তার বাড়ী পুর্বচান্দঘাট গ্রামে আর মুল আসামীর বাড়ী শিবু বাগবাড়ি এলাকায়। মুল আসামীর পিতা মাতার নামের সাথেও তাদের নাম ঠিকানা মিল নাই। এ ঘটনার সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে দোষী পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেয়ার দাবী জানান। এ ব্যাপারে এসআই রবিউল ইসলামের সাথে তাঁর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ওই নারী মামতাজ নামে এলাকায় পরিচিত। জিজ্ঞাসা করা হলে তিনিই মামতাজ বলে জানান। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তির নাম ঠিকানা মুল আসামীর নাম ঠিকানার সাথে গড়মিল রয়েছে এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ওই নারীর জাতীয় পরিপত্র চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি দেখাতে অপরাগতা প্রকাশ করায় যাচাই করা সম্ভব হয়নি। কাউনিয়া থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজার রহমান বলেন, ওই নারীর সাথে তো পুলিশের কোন শত্রুতা নাই। মমতাজের বিরুদ্ধে আদালত পরোয়ানা জারী করে। তাকে আটকের পর তার কাছে জাতীয় পরিচয়পত্র দেখতে চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু ওই নারী দেখাতে পারে নাই। পরে তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছিল। আদালতে থেকে ওই নারী জামিনে এসেছেন বলে তিনি জানতে পেরেছেন।


0 coment rios: