সংবাদ শিরোনাম
লোডিং...
Menu

Saturday, October 30, 2021

উপকরণ পাচ্ছে স্বাভাবিক জীবনে ফেরা দস্যুরা, মামলা নিয়ে হতাশা

এনায়েত করিম রাজিবঃবাগেরহাট থেকেঃএক সময় সুন্দরবনসহ বঙ্গোপসাগরে দাপিয়ে বেড়ানো ৩'শ২৬ দস্যু এখন অন্যান্য সাধারণ মানুষের মত সমাজেই বসবাস করেন। ২০১৬ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময় যমুনা টিভির সাংবাদিক মোহসিন-উল- হাকিম ও র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)'র সমঝোতায় আত্মসমর্পন করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছেন তারা।


আত্মসমর্পনের পর থেকে সরকার ও র
্যাব'র পক্ষ থেকে দস্যুদের বিভিন্ন সহযোগিতা করা হয়েছে। এবার এই দস্যুদের স্বাবলম্বী করার উদ্যোগ নিয়েছে র্যাব। এর অংশ হিসেবে স্বাভাবিক জীবনে ফেরা দস্যুদের মাঝে বসত ঘর, দোকান ঘর, নৌকা, জাল , ট্রলার ও গবাদি পশু প্রদান করবে বিশেষ এই বাহিনীটি।আগামী সোমবার (০১ নভেম্বর) সকালে রামপাল উপজেলা পরিষদ চত্তরে সরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল আনুষ্ঠানিকভাবে দস্যুদের হাতে এসব উপকরণ তুলে দিবেন। উপকরণ প্রদান অনুষ্ঠানে,খুলনা সিটি কর্পোরেশন মেয়র আলহাজ্ব তালুকদার আঃ খালেক, বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তণ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপ-মন্ত্রী বেগম হাবিবুন্নাহার, বাংলাদেশ পুলিশের মহা-পরিদর্শক ড. বেনজির আহমেদ, র্যাবের মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনসহ প্রশাসনের উর্দ্ধোতন কর্মকর্তাগণ উপস্হিত থাকার কথা রয়েছে।র্যাব সূত্রে জানা যায়, আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করার উদ্দেশ্যে স্বাভাবিক জীবনে ফেরা ৩২৬ জন দস্যুকেই বিভিন্ন উপকরণ প্রদান করা হবে। এর মধ্যে প্রয়োজনের ভিত্তিতে ১০২টি বসত ঘর, ৯০টি দোকান ঘর, প্রয়োজনীয় জালসহ ১২টি নৌকা, ৮টি ট্রলার ও ৮৮ গবাদি পশু প্রদান করা হবে। এজন্য ঘর নির্মান, নৌকা ও ট্রলার তৈরিসহ সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। বিনামূল্যে এসব উপকরণ পাওয়ার খবরে খুশি আত্মসমর্পণকৃত দস্যু ও তাদের পরিবার। শুধু সাবলম্বী নয়, প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী মামলা থেকেও মুক্তি পেতে চায় তারা। এক সময়ে সুন্দরবনের সবথেকে বড় দস্যু বাহিনী মাষ্টার বাহিনীর প্রধান মোস্তফা শেখ ওরফে কাদের মাষ্টার বলেন, অস্ত্র গোলাবারুদ জমা প্রদান করে সরকারের ডাকে সাড়া দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছি আমরা। স্বাভাবিক জীবনে ফেরার পর থেকে সরকার আমাদের নানা রকম সহযোগীতা করেছেন। যা আমাদের জন্য অনেক প্রাপ্তী, এখনও প্রতিটি ঈদে র্যাবের পক্ষ থেকে আমরা ঈদ সামগ্রী পাই। এখন আবার আমাদেরকে ঘরসহ নানা প্রয়োজনীয় জিনিস দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে র্যাব। এছাড়া আমরা কাজ-কর্ম করে অনেক ভাল আছি। তবে দস্যুতার সময়ে আমাদের নামে থাকা বিভিন্ন মামলা নিয়ে খুবই বিপাকে রয়েছি। প্রতি মাসেই এক দুইবার অনেক সময় সপ্তাহে একাধিবার আদালতে হাজিরা দিতে হয়। আদালতে যাওয়া-আসার গাড়ী ভাড়া ও উকিল মোহরীকে টাকা দিতে হয় প্রতি তারিখে। যা আমাদের মত খেটে খাওয়া মানুষের জন্য খুবই কষ্টের। আবার হাজিরা না দিলে জামিন বাতিল করে দেয়। সরকারের ঘোষনা অনুযায়ী আমাদের মামলাগুলো দ্রুত প্রত্যাহারের ব্যাবস্থা করলে পরিবার-পরিজন নিয়ে তিন বেলা খেয়ে-পড়ে বাঁচতে পারতাম। আব্দুল বারেক তালুকদার শান্ত নামের আরেক দস্যু বলেন, সরকার আমাদের যে সুযোগ দিয়েছে তাতে আমরা কৃতজ্ঞ। এখন অন্তত পরিবারের কাছে থাকতে পারছি। আবার নগদ অর্থও দিয়েছে সরকার আমাদের। কিন্তু সেই অর্থ আমাদের উকিল-মোক্তারের পিছনে ব্যয় হয়েছে। ঘর, জাল ও দোকান প্রদানের উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। তবে এর সাথে সাথে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও সরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আমাদের মামলা গুলো প্রত্যাহারের দাবি জানাই। মোঃ রিপন ও মাওলা ফকির নামের দুইজন বলেন, আমরা খুবই খুশি হয়েছি। র্যাবের দেওয়া ঘরে থাকতে পারব। এখন আর বৃষ্টিতে ভিজতে হবে না। গরু ছাগল পালন করে আয়ও করা যাবে। র্যাব-৬ খুলনার সিইও লে. কর্নেল মোহাম্মাদ মোস্তাক আহমেদ বলেন, আত্মসমর্পনের পর থেকে স্বাভাবিক জীবনে ফেরা দস্যুদের আমরা নিয়মিত যোগাযোগ রেখেছি। তাদেরকে নানাভাবে সহযোগিতাও করা হয়েছে র্যাবের পক্ষ থেকে। প্রতি ঈদের ঈদসামগ্রী ও নগদ অর্থও প্রদান করেছি আমরা। এর ধারাবাহিকতায় দস্যুদের স্বাবলম্বী করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এর অংশ হিসেবে ১লা নভেম্বর স্বাভাবিক জীবনে ফেরা দস্যুদের মাঝে আমরা ঘর, জাল, নৌকা, ট্রলার ও গবাদি পশু বিতরণ করব। আমরা বিশ্বাস করি স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসা এসব মানুষের জীবনমান উন্নয়নে এই উপকরণ তাদের খুবই উপকারে আসবে।

শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: