মোঃ আসাদুজ্জামান আসাদ,কাউনিয়া (রংপুর)প্রতিনিধিঃ কাউনিয়া গরুর খামারী বৃদ্ধি হওয়ায়, বেড়েছে গো-খাদ্যের চাহিদা। ফলে বাণিজ্যিকভাবে নেপিয়ার ও পাটচং ঘাস চাষ করে এ অঞ্চলের কৃষকরা এখন স্বাবলম্বী। অল্প সময়ে স্বল্প জমিতে ধানের চেয়ে নেপিয়ার ঘাস চাষ করে বেশী লাভবান হচ্ছেন অধিকাংশ কৃষক।
এক সময়ে কৃষকদের অনেক জমিই পতিত থাকত। আগে চারণভূমিতে গরু বেঁধে ঘাস খাওয়ানো হতো। বর্তমানে কৃষি ক্ষেত্রে নানা প্রযুক্তি আসায় এখন কেউ আর জমি পতিত রাখে না। এমনকি জনসংখ্যা বাড়ায় ভূমির পরিমাণও দিন দিন কমে যাচ্ছে। ফলে ঘাস সংকট দেখা দেয়।এছাড়া গৃহপালিত পশু পালন লাভজনক হওয়ায় কাউনিয়ায় প্রায় প্রতিটি পরিবারেই গরু-ছাগল পালন করেন। সেই সঙ্গে এ অঞ্চলে বেশ কিছু গরুর খামার গড়ে উঠেছে। এসব গবাদিপশুর ঘাস সংকট নিরসন এবং অর্থকারী হিসেবে ফসলি জমিতে নেপিয়ারসহ বিভিন্ন জাতের ঘাস চাষ করা হচ্ছে।
কাউনিয়া উপজেলার তালুকশাহাবাজ এলাকার খামারী শ্রী ইন্দ্রজিৎ সরকার বলেন, ‘সেচ, সার ও শ্রমিকসহ প্রতি বিঘা (৩৩ শতক) জমিতে ঘাস চাষে খরচ হয় ১০-১২ হাজার টাকা। তবে বছরে ঘাস বিক্রি করা যায় প্রায় ৪৫ হাজার টাকা। এক বিঘা জমিতে গত তিন বছর ধরে ঘাস চাষ করে বেশ লাভবান হয়েছি। ঘাস পাইকারী বিক্রেতা তরিকুল ইসলাম জানান, কয়েক বছর ধরে নেপিয়ার ঘাসের প্রচুর চাহিদা। ফলে দীর্ঘদিন ধরে কৃষকদের কাছ থেকে ঘাস কিনে বাজারে বিক্রি করা হয় । আর খড়ের দাম বাড়ায় ঘাসের চাহিদা বেশি । তাছাড়া কাউনিয়া গরু খামারী বৃদ্ধি পাওয়ায় খড়ের ও ঘাসের চাহিদা বেড়েছে। তাই প্রতি আঁটি ঘাস ১০ টাকা দরে বিক্রি করা হয়। বৎসরে কয়বার কাটা যায় জানতে চাইলে তিনি বলেন বৎসরে ৬বার কাটা হয় ।২৫ শতক জমি ৬ হাজার ৫শত টাকা থেকে- ৮ হাজার টাকা পর্যন্ত প্রতিবার কেনা হয়।
ঘাস ক্রেতা শ্রী নিতিশ কুমার মিত্র (নসু) জানান, গ্রামাঞ্চলের মানুষদের স্বচ্ছলতার চাবিকাঠি হচ্ছে গৃহপালিত পশু। কিন্তু গবাদিপশুর জন্য এ বছর খড়, চালের কুড়া, ভুসি, খুদ, সরিষার খৈল ও ভুট্টাজাতীয় গো-খাদ্যের পণ্যের দাম খুব বেশী। ওই সব গো-খাদ্যের চেয়ে নেপিয়ার ঘাসের দাম কম এবং খুবই পুষ্টিকর খাবার। এ ঘাস খাওয়ালে অল্প দিনের মধ্যে গরু-ছাগল মোটাতাজা হয় এবং অধিক দুধ পাওয়া যায়। তাই আমি আমার গরুকে প্রতিদিন ১০ আটি ঘাস কিনে খাওয়াই। গবাদিপশু মোটাতাজাকরনে সবুজ ঘাসের বিকল্প নেই ।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মনোজিৎ কুমার বলেন, “মায়ের দুধের যেমন কোনো বিকল্প নেই, তেমনি গবাদি প্রাণী পালনে উন্নত জাতের ঘাস চাষের কোনো বিকল্প নেই। ঘাস দুগ্ধ বৃদ্ধিসহ প্রাণীরোগ প্রতিরোধ ও প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়ক হিসাবে কাজ করে। সেই সাথে আর্থিক লাভবান তো রয়েছেই। কাউনিয়ায় ৩ হেঃ জমিতে ঘাস চাষ হয়েছে বলে জানান তিনি।


0 coment rios: