বাগেরহাট প্রতিনিধিঃহাঁটি হাঁটি পা পা করে গত ১লা ডিসেম্বর মোংলা বন্দর ৭০ বছরে পা দিয়েছে। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য এক সময়ের মৃত মোংলা বন্দর এ সময়ে এসে সব ক্ষেত্রে ব্যাপক ঘুরে দাঁড়িয়েছে। সামনে চলমান ৯টি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে বন্দরের সোনালী স্বপ্ন বাস্তবায়ন হবে এমনটাই আইনিউজের কাছে মন্তব্য করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
মোংলা বন্দরের নথি থেকে জানাগেছে,বিদায়ী অর্থবছর (২০২০-২১) মোংলা বন্দরে সর্বোচ্চ ৯৭০টি জাহাজ আগমনে নতুন রেকর্ড সৃষ্টির পাশাপাশি এ সময়ে রেকর্ড পরিমাণ ১১৯ দশমিক ৪৫ লাখ মেট্রিক টন পণ্য হ্যান্ডলিংও (ওঠানামা) খালাস করেছে। রিকন্ডিশন গাড়ি এসেছে ১৪ হাজার ৪৪৭টি; যা থেকে মোংলা বন্দর রেকর্ড পরিমাণ ৩৪০ কোটি টাকা আয় করেছে। একই সময়ে ব্যয় হয়েছে ২১০ কোটি টাকা। নিট মুনাফা হয়েছে ১৩০ কোটি টাকা। এটি লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৯ কোটি টাকা বেশি। এ ব্যাপারে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ মুসা বলেন, বিগত ২০০১ থেকে ২০০৮ অর্থবছর পর্যন্ত মোংলা বন্দর নানামুখী প্রতিকূলতার কারণে লোকসানি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছিল। বিগত ২০০৭-২০০৮ অর্থবছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ৭টি জাহাজ ও পূর্ণ অর্থবছরে মোট ৯৫টি জাহাজ আগমন করেছিল। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে মোংলা বন্দরের উন্নয়নে সরকার অগ্রাধিকার ও বিশেষ গুরুত্ব দেন। শুরু হয় উন্নয়ন ও আধুনিকায়নের কাজ। তাই ক্রমান্বয়ে মোংলা বন্দর গতিশীল হয়ে উঠায় প্রতি বছর বিদেশি জাহাজের আগমনে রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে। পদ্মা সেতু, রামপাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র, খানজাহান আলী বিমানবন্দর, রেললাইন ও পশুর চ্যানেলের ইনার বারের খননসহ মোংলা বন্দরের চলমান ৯টি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে এ বন্দরের কর্মচাঞ্চল্যতা আরো অনেকাংশে বেড়ে যাবে বলে জানিয়েছেন বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান। তিনি আরো বলেন, ইতিমধ্যেই আউটার বারের খনন কাজ সম্পন্ন হওয়ায় বড় বড় জাহাজ সরাসরি চ্যানেলে অবস্থান ও জেটিতে ভিড়তে পারছে। ফলে এ বন্দর ব্যবহারে দিনকে দিন আগ্রহী হচ্ছেন দেশি-বিদেশি আমদানি-রপ্তানিকারকেরা। বন্দর উন্নয়নে মাষ্টার প্লান তৈরির কাজ চলছে এবং এটি বাস্তবায়ন হলে মোংলা বন্দর দেশের অর্থনীতি ও আমদানি রপ্তানি বাণিজ্যে ব্যপক ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে।উল্লেখ্য, ১৯৫০ সালে বিট্রিশ বাণিজ্যিক জাহাজ দ্য সিটি অব লায়ন্স জাহাজ সর্বপ্রথম সুন্দরবনের পশুর নদীর জয়মনিরগোল এলাকায় নোঙরের মধ্য দিয়ে মোংলা বন্দরের যাত্রা শুরু হয়।

0 coment rios: